+8802589924917 | +8801511334466 pollisree@yahoo.com

পল্লীশ্রী

বালুবাড়ী, দিনাজপুর।

নিরাপদ

পল্লীশ্রী একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন হিসেবে ১৯৮৭ সালের ০৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পল্লীশ্রী বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন বিশেষ করে কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় উন্নয়ন সহযোগীতা ও বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তি ও সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করনের মধ্য দিয়ে যে অভিজ্ঞতা তাতে দেখা যাচ্ছে যে, পৃথিবীর যে সব দেশে শিশু বিয়ের হার সবচেয়ে বেশি, বাংলাদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম। শিশু বিয়ে যে কোন কিশোরীর জীবনের এমন একটি ঘটনা, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ঐ বিবাহিত কিশোরীর ব্যক্তিগত জীবনের সকল ক্ষেত্রে। আর এর সুদুর প্রসারী প্রভাব পড়ে বিবাহিত কিশোরীর নিজের ও সন্তানের স্বাস্থ্যের উপর, পরিবার, সমাজ এবং সর্বোপরি একটি রাষ্ট্রের শিক্ষা-স্বাস্থ্য-অর্থনীতির মত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাত গুলোতে। বিবাহিত কন্যা শিশুদের কখনোই শিশু হিসেবে স্বীকৃতি বা বিবেচনা করা হয় না। বিবাহিত হওয়ার পর তারা ঘরে আটকে যায় ও মেয়ে শিশু হিসেবে প্রতিনিয়ত তার অধিকার লঙ্ঘন করা হয় যা বরাবরই অদৃশ্য থেকে যায়।

 

পল্লীশ্রী উপরোক্ত বিষয়ের নেতিবাচক দিকগুলোকে বিবেচনা করে কমিউনিটি পর্যায়ে বিভিন্ন ভাবে সচেতনতার কাজটি করে চলেছে। বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ অনুযায়ী বিয়ের ক্ষেত্রে পূত্রের বয়স ২১ এবং কন্যার বয়স ১৮ বছরের কম হলে শিশু বিয়ে বলে গন্য হবে, যা একটি শাস্তি যোগ্য অপরাধ।  পল্লীশ্রী বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে নিরাপদঃ (নিজেকে রাখিব পরম দায়িত্বে) এই ক্যাম্পেইনটি শুরু করেছে। ক্যাম্পেইনটি মূলত পরিবার হতে কমিউনিটি পর্যায়ে সকল মানুষের অংশগ্রহনে। একটি শিশুর জন্ম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক, হোক সে কন্যা বা পুত্র। পাশাপাশি কমিউনিটি পর্যায়ের সকল মানুষকে বাল্য বিয়ে সম্পর্কে সচেতনতা যেমন- বাল্য বিয়ের কুফল, এ সম্পর্কিত কু-সংস্কার, রাষ্ট্র নির্ধারিত বিয়ের সঠিক বয়স, রাষ্ট্রীয় আইন এবং টোল ফ্রি নম্বর, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা, গর্ভবতী মায়ের পরিচর্যা, প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি সম্পর্কে বিশেষ আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করা, পাশাপাশি একজন কিশোর/কিশোরীর বিয়ের উপযুক্ত হওয়ার বয়স জন্ম সনদ অনুযায়ী নির্ধারন করা। অর্থাৎ তার জন্ম তারিখ হতে কন্যার জন্য ১৮ বছর এবং পুত্রের জন্য ২১ বছর পূর্ন হওয়ার দিনটি সম্পর্কে অবহিত থাকা। এ সম্পর্কিত তথ্যটি পল্লীশ্রী’র বাস্তবায়িত নারী ক্লাব সমূহে সংরক্ষিত ও উন্মুক্ত থাকবে এ বিষয়ে পরিবারের সদস্যগনকে সচেতনতাসহ পরিবারের কিশোর কিশোরীটিও যেন সচেতন হয় এবং আত্মবিশ^াস গড়ে তোলাসহ নিজেকে প্রস্তুত এবং চর্চায় পরিনত করা যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করায় স্থানীয় নারী ক্লাব ও সিবিও সদস্যগন সহযোগীতা ও তদারকি করবে।

 

প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলোচনা পূর্বক পরিষদ অবগত হবেন ও প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করবেন। পরিবারের সদস্যগনকে সচেতনতাসহ পরিবারের কিশোর কিশোরীগন এ বিষয়ে সচেতন হয়ে পরিবারের অবগতি সাপেক্ষে নিজেদের নাম নিজেরাই তালিকা ভুক্ত করবেন।

 

নিরাপদ ক্যাম্পেইনের গৃহিত কার্যক্রম সমূহঃ

১. কিশোরী কিশোরীগন নিজেরাই নিজেদের নাম তালিকাভুক্ত করবেন।

২. ১২ থেকে ১৮ বছরের কিশোরী এবং ১২ থেকে ২১ বছরের কিশোরদের তালিকা তৈরী

৩. গ্রাম/ পাড়া ভিত্তিক পরিবার সমূহকে সচেতন করা

৪. হটলাইন নম্বর অবগত করা ১০৯, ৯৯৯, ৩৩৩, ১০৯৮

৫. স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করা ও প্রয়োজনীয় যোগাযোগ চলমান রাখা।

৬. প্রয়োজন সাপেক্ষে কিশোর-কিশোরীগন লেখাপড়া/শিক্ষা গ্রহনের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশিক্ষনে, আয়মূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহন করতে পারে তার ব্যবস্থা নেয়া।

 

আমরা ক্যাম্পেইন কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন শুরু করেছি, মানুষের সচেতনতা বাড়ছে পাশাপাশি কিশোরীদের স্কুলে ঝড়ে পড়ার হার কমছে এবং বাল্য বিয়ের সংখ্যাও নির্ধারিত এলাকায় কমে আসছে। একটি শিশু যেন তার পরিবার ও সমাজে নিজ আত্মবিশ^াসে বড় হতে পারে, নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারে। বিশেষকরে পরিবার ও সমাজের কারো দ্বারা বাল্য বিয়ের শিকার না হয়। তাই শিশু সুরক্ষায় আমরা নিরাপদ ক্যাম্পেইনটি প্রতিটি গ্রামে সকল মানুষের দায়বদ্ধতা তৈরীর মধ্য দিয়ে আপনার আমার শিশুদের বাল্য বিবাহ মুক্ত পরিবেশ তৈরীতে সহায়তা করতে পারি। সরকারি কর্মসূচীর সাথে সমন্বয় করে গ্রামে এই ক্যাম্পেইনটি চলমান রাখলে বাল্য বিবাহ বন্ধে একটি কার্যকর ভুমিকা রাখবে বলে আমরা আশাবাদি। সর্বোপরি একটি সচেতন পরিবারই হচ্ছে বাল্য বিবাহ বন্ধের মূল প্রতিষ্ঠান।