সালিস প্রেক্ষিত-২ঃ নারীকে সুরক্ষিত রাখার আইন সমূহ ও বাস্তবতা বিষয়ক গোল টেবিল আলোচনা সভা

সালিস প্রেক্ষিত-২ঃ নারীকে সুরক্ষিত রাখার আইন সমূহ ও বাস্তবতা বিষয়ক গোল টেবিল আলোচনা সভা

  • Category: News
  • Date 01-06-2025

প্রোগ্রামের নাম নামঃ সালিস প্রেক্ষিত-২ঃ নারীকে সুরক্ষিত রাখার আইন সমূহ ও বাস্তবতা বিষয়ক গোল টেবিল আলোচনা সভা
বাস্তবায়নের তারিখঃ ২৬.০৪.২০২৫ইং
স্থানঃ প্রধান কার্যালয়, বালুবাড়ী, সদর দিনাজপুর।
অংশগ্রহনকারীঃ ৭৫ জন (নারী- ৪২পুরুষ- ৩৩জন)

সালিশ প্রেক্ষিত: নারীর সুরক্ষায় গৃগীত আইন সমূহ ও বাস্তবতা বিষয়ক গোল টেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ হুমায়ূন কবির সরকার বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল, দিনাজপুর। সভা প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব শামিম আরা বেগম, নির্বাহী পরিচালক, পল্লীশ্রী, বালুবাড়ী, দিনাজপুর। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জনাব নাগমা পারভীন জেবা-এ্যাডভোকেট, পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর), নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল, জজ কোর্ট, দিনাজপুর, জনাব ডাঃ সিরাজুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, সদর, দিনাজপুর, রুকশানা মমতাজ লিজা-গাইনী ও প্রসুতি বিভাগ ও বিশেষজ্ঞ  সার্জন, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, সদর, দিনাজপুর, জনাব মোঃ জহিরুল, সাব ইন্সপেক্টর, কোতয়ালী থানা, দিনাজপুর, শারমিন সাত্তার- প্রিন্সিপাল দিনাজপুর কেয়ার নার্সিং ইন্সটিটিউট,  মোঃ গোলাম নবী দুলাল, সাংবাদিক দিনাজপুর প্রেস ক্লাব, মোঃ মোর্শেদ, সাংবাদিক দিনাজপুর প্রেস ক্লাব, মোঃ শফিকুল ইসলাম-প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক স্বারদেশ^রী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, দিনাজপুর। এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন সিবিও, আদর্শ গ্রাম ও নারী ক্লাবের সদস্যবৃন্দ ও নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশু এবং তাদের বাবা-মা, অভিভাবক বৃন্দ।

গোল টেবিল আলোচনায় আলোচকদের মধ্য হতে যে সব বিষয় উঠে আসে তা হলো-

  • মীমের বাবা- পার্বতীপুর ডাঙ্গাপাড়ার আবিদা সুলতানা মিম ২০১৯ সালের ৩০ তারিখ আমজাদ হোসেন চকলেট দেয়ার নামে ঘরে নিয়ে যায় এবং ধর্ষন পূর্বক হত্যা করে। তাৎক্ষনিক আসামীকে দেখা যায় নাই। ২০১৯ সাল থেকে জজ কোর্টে তারিখের পর তারিখ যায় ২০২৫ সালে পর্যন্ত আমি শুধু কোর্টে হাজিরাই দিচ্ছি। ২জন আসামীর একজনও কোর্টে হাজির নাই। আমি বাদি হাজিরা দেই কিন্তু আসামী হাজিরা নাই। এত বড় ক্ষতি হওয়ার পরও যদি এত সময় লাগে একটি মামলা পরিচালনা করতে। ২০২২ সাল থেকে স্বাক্ষী দিচ্ছে। আপনারা সকলে দেখবেন যে বিচারটি দ্রæত সমাধানে আসে। 
  • দীশার বাবা- গত ২.১২.২৪ তারিখ আরবি পড়তে যাওয়ার গিয়েছিল। হঠাৎ করে শুনতে পাই আমার মেয়ে ফাশি দিয়েছে। একজন বলল তোমার মেয়েকে বাচাতে হলে তাকে দ্রæত হাসপাতালে নিয়ে যাও। তাৎক্ষনিক হাসপাতালে নেই । ইউপি চেয়ারম্যানসহ পুলিশ প্রশাসন সহ অন্যান্যরা সহযোগীতা করলেও । পিপি এড. রবিউল ইসলাম ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে মামলা চালানোর প্রস্তাব দেয়। পরে জানতে পারি ধর্ষকের পরিচিত পিপি এড. রবিউল ইসলাম।  হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। তৎকালিন ওসি মামলার বাদি হয়ে 
  • দীশার মা- আমার মেয়েকে আমি পানিতে ফেলে দেই নাই। আমার মেয়ের বিচার চাই।
  • নাসরিনের বোন- চিরিবন্দর হতে সকাল ৬ টার সময় বের হয়ে এসে দেখি আমার বোনের রক্তাক্ত শরীর । আমি নিজেই মৃত দেহ গোসল করাই আমি দেখেছি ক্ষত চিহ্ন গুলো। কিন্ত আমরা এখনও কোন সুবিচার পাই নাই। আসামী দ্বীধাহীন ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
  • রীয়া: ২০১৬ সালে বিয়ে হয়। সেখানে অনেক নির্যাতন করে আমার স্বামী ও আমার শাশুড়ী। আমার স্বামী পরকিয়া করে।  ২০২০ সালে আমাকে নির্যাতন করে। আমি যখন হাসপাতালে ৭ দিনের মাথায় আসামীরা জামিন পায়। ৪ বছর মামলার হলেও স্বাক্ষী নেয় না শুধু তারিখের পর তারিখ যায় কিন্তু কিছু হয় না। ১ নং আসামী বর্তমানে হাজতে। এসিড নিক্ষেপ করে। 
  • মঞ্জু আপা- ২০১৫ সালে বিয়ে হওয়ছিল । আমার স্বামী আমাকে তালাক দেয়। ইউপিতে বিচার চাইলে কোন বিচার পাই নাই। পরবর্তীতে উকিল ধরে মামলা করি। এরপর আপোশের মাধ্যমে তার ঘর পুনরায় ফিরে যায়। পরে পরকিয়ার কারনে তার চাকরি যায় কিন্তু আমাকে দোষারোপ করে। পল্লীশ্রীতে সালিশে এসে মামলা করি এখানে আমাকে সুষ্ঠু বিচার করে মোহরানা আদায় করিয়ে দেয়। এবং আমার সন্তাদের ভরন পোষন বাবদ খরচ দেয়ার ব্যবস্থা করে। আমার কথা শুধু পল্লীশ্রী কেন প্রত্যেকের জন্য যেন বিচারিক কার্য সহজ হয়। আমরা সকলেই মানুষ।
  • সুমনার মা- আদালতে মামলা হয়েছে। আতাউর রহমানের মাধ্যমে। আসামীরা এখনও হাজিরা দেয় নাই। আসামী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি ন্যায্য বিচার পাই নাই আমি ন্যায্য বিচার চাই। 
  • শিপন ভাই-সময়োপযোগী গোল টেবিল আলোচনা। দিন দিন নির্যাতনের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমার মনে হয়ে এটি রাষ্ট্রের ক্ষত। মামলার দীর্ঘ সুত্রিতা, বিচারিক আদালতের সংখ্যা বাড়ানো উচিৎ। ২০১৯ সালের মামলা ১৮০ দিনে শেষ হওয়ার কথা। কিন্ত এখন শেষ হচ্ছে না তাই বিচারিক আদালত বাড়ানো সুপারিশ রইল। 
  • মমেজা বেগম- নির্যাতনের শিকার হয়েছিলাম আপনার পুরুষরা একটু শক্ত হলে নির্যাতন কমে আসবে। আমার সন্তান নির্যাতনের শিকার হলে আপনাকে ব্যাথা লাগে না? সকলে পয়সার বিনিময়ে কাজ করে। যার কারনে ন্যায্য বিচার পাওয়া যায় না।
  • সাবিনা বিনতে আনোয়ার-৮০% শতাংশ সমাধান করা হলেও পরবর্তীতে পুনরায় সমস্যা তৈরি হয়। দিনাজপুরে বাল্য বিয়ে বেশি যার কারনে নির্যাতন বেশি। পরকিয়ার পরিমান বেশি। মাদকের ছড়াছড়ি, সে যায়গায় আমাদের সকলের কাজ করতে হবে। ফুলবাড়ী ঘটনা ধর্ষনকারী বয়স ৭০ বছরের উর্দ্ধে তার পরও তারা আপষের জন্য এসেছে। ১৮০ দিনের মধ্যে যেন ন্যায্য বিচার পায় সে বিষয়ে লক্ষ রাখার অনুরোধ।
  • শফিকুল ইসলাম- আমার নাতনি প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় ফুসলিয়ে সাইডে নিয়ে গিয়ে ধর্ষন করে। স্কুল কর্তৃপক্ষ কিছু করে নাই। যারা অপরাধ করে তারা লজ্জা পায় না/কষ্ট পায় না কেন? তা নিয়ে গবেষনা হওয়া উচিৎ। শিক্ষকরা বলেন যে মেয়েটি খারাপ, আমি বলেছিলাম যে আপনারা আগে বুঝতে পারেন নাই। একটি যায়গায় গিয়ে এই মানুষগুলো আর কিছু করতে পারে না। মামলাটি কি অবস্থায় রয়েছে আমি জানি না। আমি আইনকে শ্রদ্ধা করি কিন্তু সত্য কথা আইনে প্রতি মানুষ হতাশ। আমি যুদ্ধ করেছি এই দেশকে স্বাধীনতার জন্য। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পর এই দেশের কোন উন্নতি হয়েছে কিনা আমি জানি না। চলতি মাসে ১৩৬ টি নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে মামলা হয়েছে। মামলা থেকে মানুষ প্রতিকার পাচ্ছে না। আস্থার যায়গাটি কোথায়? আলোচনা যে করছি প্রতিকার কোথায়? 
  • গোলাম নবী দুলাল- পল্লীশ্রীকে ধন্যবাদ কারন গুরুত্বপূর্ন এবং স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে গোল টেবিল আলোচনার জন্য। যে কেইস স্টাড’ গুলো আলোচনা হয়েছে গনমাধ্যম কর্মী হিসেবে আমরা ব্যর্থতা বলতে আমরা এই কেইস গুলো নিয়ে লিখি কিন্তু ফলোআপ করি না। তবে এই ঘটনাগুলোর পরিসমাপ্তি হওয়া উচিৎ। আমরা এই ধরনের বিষয়গুলো গনমাধ্যমে তুলে ধরি। প্রতি মাসে এই ধরনের ঘটনা ২-৩ টি আলোচনা হয়। দীর্ঘ দিন ধরে যে মামলা গুলো চলমান রয়েছে সে নির্যাতনের ঘটনাগুলোর পরিসমাপ্তি হওয়া জরুরী। 
  • মলি আপা- আমরা খুব মর্মান্ত। স্থানীয় পর্যায়ে ইউপি কমিটি রয়েছে তা সক্রিয় না। কমিটিগুলে এক্টিভ করতে হবে। 
  • অরবিন্দ (ওয়ার্ল্ড ভিশন)- স্পর্শ কাতর বিষয়গুলো সরজমিনে  শুনেছি। মামলার দীর্ঘ সুত্রিতা আর হবে কিনা জানি না তবে এই স্পর্শকাতর বিষয়গুলো দীর্ঘ সুত্রিতা হওয়া উচিৎ না। বাদীর এত প্রমান থাকা সত্তেও বিবাদী ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রান্তিক পর্যায়ে আপনাদের উপস্থিতি অনেক নাড়া দিবে। ট্রোল ফ্রি নম্বর গুলো সক্রিয হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আমার সন্তান কোথায় যায় কি করে তার নিয়মিত খোজ খবর নিতে হবে। উন্নয়ন কর্মী হিসেবে আমাকে বিষয়গুলো খুব নাড়া দিয়েছে। সকলে মিলে একসাথে কাজ করতে হবে। 
  • শারমিন সাত্তার- ধন্যবাদ গোলটেবিল সভা আয়োজন করার জন্য। এই আলোচনার পরও তারা বিচার পাবে কিনা আমি সন্ধিহান। বাদী পক্ষে কাজ করে আইনজীবি, একজন ধর্ষকের পাশে একজন আইনজীবি দাঁড়ায় কিভাবে। এই সমস্ত কেসে দৃশ্যমান সেই যায়গায় এই আইনজীবি পাশে দাড়ায় কিভাবে। সমাজে ধর্ষন, নারী নির্যাতন তখনই সোচ্চার হবে যখন আইনজীবিরা ধর্ষকের পাশে দাঁড়াবে না। নির্যাতিতদের পক্ষে দাঁড়াই। 
  • জহিরুল হক (পুলিশ)- আমরা সবাই পুলিশের কাছে বিচারের প্রত্যাশা করি। বিলম্বের অনেক কারন রয়েছে। যার যার পক্ষ থেকে যেখানে থাকি না কেন নিজ নিজ যায়গা থেকে নির্যাতিতের পাশে দাড়াই। নিজ নিজ অবস্থান থেকে আইনকে সহায়তা করি তাহলে বিচারের ধীর্ঘ সুত্রিতা কমে আসবে। 
  • জলি আপা (আইনজীবী)- আমরা আশা বাদী। মামলা গুলো বিচারাধীন। বাংলাদেশের সংবিধানের ১০ ধারায় প্রতিটি নাগরিকের বিচার পাওয়া ও বিচার চাওয়ার অধিকার রয়েছে। একটি মামলা এলে আমারা আইনজীবি হিসেবে এফআইআর-এর জন্য প্রেরণ করি। পুলিশ মেডিকেল প্রতিবেদনের জন্য প্রেরণ করেন। কিন্তু মেডিকেল প্রতিবেদন নেগেটিভ আসে কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভিন্ন আসলে মাঝে মাঝে আমাদেরও কিছু করার থাকে না। 
  • মোরশেদুর রহমান (সাংবাদিক) বিচার নিভৃতে কাদে। নির্যাতিত মিমের বাবা যে আর্তনাদ করল তা কিন্তু হাজারো বাবার আর্তনাদ। রাষ্ট্রের দায়িত্ব সুরক্ষা আইন করেছে তেমনি আইনের ব্যবহারে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়। মিমের বাবার আর্তনাদ আজ কেন রাষ্ট্রের কাছে পৌছানো যাচ্ছে না। 
  • সাথী দাস (আইনজীবি)- সন্তান জন্ম দানের পর শিক্ষা দেই কি যে মায়ের প্রতি কি আচরণ হওয়া উচিৎ। আমাদের বুঝতে হবে ভুলটা কোথায়। বাবা মা হয়ে সন্তানকে শিক্ষা দেন- কিভাবে নারীর প্রতি আচরণ করতে হয়। মাদক থেকে নিজেদের সন্তানদের রক্ষা করতে হবে। 
  • এড. আতাউর- পূজার মামলা খেয়ে না খেয়ে স্বাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে পল্লীশ্রী’র সহযোগীতায় তাকে একটি সুষ্ঠু বিচার প্রাপ্তিতে সহায়তা করে। নিজ নিজ স্থান থেকে পরিবর্তন আসতে হবে। 
  • ডাঃ লিজা- আমারা প্রতি দিনেই গাইনি বিভাগের স্বাক্ষী হয়ে থাকি। গর্ভবতী মায়েদের গর্ভে থাকা অবস্থায় জানতে চায় গর্ভের সন্তান কি? এমনও ঘটনা রয়েছে যে হাসপাতালের লেবার রুমের মধ্যেই মেয়ে সন্তান হওয়ার কারনে মারধর করে এবং গর্ভে থাকা অবস্থায় কন্যা সন্তানের কথা শুনে নষ্ট করার কথা ভাবে। সদ্য ডাক্তার হওয়ার পর ৮ মাসের বাচ্চার সাথে ধর্ষনের জন্য খালাতো ভাই তার যৌনাঙ্গো চাবি ঢুকিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে। পেটের সন্তানটি মেয়ে বা ছেলে তার জন্য বাবাই দায়ী। ঘটনাগুলো চারপাশে ঘটে যাচ্ছে। বিচারগুলো দু-একটিও যদি দৃষ্টান্তমূলক হয় তাহলে ঘটনা ঘটানের পূর্বে অন্তত্য ভাববে। নারীদের মূল্যায়ন করতে হবে। আমরা বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করবো এবং সকলে মিলে এগিয়ে যাব। 
  • নাজমা রেবা (পিপি)- বিচারক বা উকিল সৎ হলেই শুধু হবে না। থানা থেকে একটি প্রতিবেদন আসতে ৬ মাস সময় লেগে যায়। সকল আইনজীবি সমান নয়। কোন সমস্যা হলে আমার বাড়ীতে নক করবেন আমি আপনাদের পাশে আছি। 
  • সিরাজুল ইসলাম (ডাক্তার)- স্টেক হোল্ডাররা সকলে নিজ নিজ যায়গায় থেকে বলতে হবে আমরা কি দায়িত্ব। যেটি কাম্য নয় তা অল্প ঘটে সেটি আমাদের পীড়া দেয়। আমরা চেষ্টা করব প্রতিবেদন প্রস্তুতে গাফিলতি না হয় এবং হলেও প্রতিরোধের ব্যবস্থা করব।
  • প্রধান অতিথি জনাব মোঃ হুমায়ূন কবির সরকার বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল, দিনাজপুর। শিশুরা যাতে নির্যাতিত না হয় সেটির জন্য এই নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনার তৈরি হয়। বাংলাদেশের মানুষ সকালে একটি কথা বললে বিকালে অন্য কথা বলি। নারী নির্যাতনের মামলা গুলো মেডিকেল প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে হয়। মানুষের ভিতর মোরালিটি থাকলে এমন হত না। থানা থেকে পুলিশি প্রতিবেদন ১০০ ভাগ কেনা বেচা হয়। ১৯ বছর চাকরি করেও একটি বাড়ী করতে পারলাম না। ৮ম-৯ম শ্রেণির ছেলে হোক মেয়ে হোক একা ছাড়া যাবে না। একটি সুস্থ্য মানসিকতার লোক ৮ মাসের একটি শিশুখে ধর্ষনের কথা চিন্তা করতে পারে না। আমার এলাকায় এ ধরনের কোন অপরাধ নেই। ৭ হাজারের মত মামলা রয়েছে। কিছু মামলার বিষয় রয়েছে। আমি ইভালুয়েশন রিপোর্ট করি খুব দ্রæত। মানুষকে সৎ উপদেশ দিতে হবে। অপরাধ বিজ্ঞানের ভাষায় সামাজিক অপরাধ ঘটবে। নৈতিকভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। শিশুকে যে কোন মানুষের হাতে সোপর্ধ করবেন না এবং এবং সংবেদনশীল যায়গায় গুড টাচ/ ব্যাড টাচ করে এ সব বিষয় সকলকে সতর্ক থাকতে বলেন।
  • সভা প্রধান জনাব শামিম আরা বেগম বলেন পল্লীশ্রী সংগঠন দীর্ঘ সময় থেকে কাজ করে আসছে। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া নারীদের সম অধিকার, নারীর স্বাধীনতা, ন্যায্যতা ও নারীরা যেনো নির্যাতন মুক্ত জীবন যাপন করতে পারে এ বিষয় কাজ করে আসছে। কাজের অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা গেছে বর্তমান প্রেক্ষপটে নির্যাতনের ধরনের পরিবর্তন এসেছে। এখন নারীরা অন্য ভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ধর্ষনের হার বেড়েছে, নারীদের পোষাক নিয়ে বলা হয় যে নারীদের পোষাকের কারণে নারীরা বেশী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তাহলে ছোট ছোট শিশুরা যে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তাদেরকে আমরা কিভাবে পোষাকের দায়ী দিয়ে দোষী করবো। সকলের উচিত নিজের নিজের জায়গায় থেকে নিজেদের দৃষ্টি কোন পরিবর্তন করা এবং নির্যাতন প্রতিরোধে রুখে দাড়ানো। পরিশেষে তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আলোচনার সমাপ্তি করেন।

শিক্ষনীয় বিষয়ঃ

  • তৃনমূল পর্যায়ের নির্যাতনের শিকার নারীরা সরাসরি জজ স্যারের সাথে কথা বলার সুযোগ পেয়েছে।
  • নির্যাতনের শিকার নারীরা সরাসরি জজ স্যারের নিকট তাদের মনের ভাব প্রকাশ করার সুযোগ পেয়েছে। 
  • নির্যাতনের শিকার নারীরা কখনই জজ স্যারের সাথে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পায়নি, প্রোগ্রামের মাধ্যমে তৃনমূল পর্যায়ের নির্যাতনের শিকার নারীদের সালিস কেন্দ্রের প্রতি আত্মবিশ^াস ও আস্থা বেড়েছে। 

Comments