+8802589924917 | +8801511334466 pollisree@yahoo.com

পল্লীশ্রী

বালুবাড়ি,দিনাজপুর

খাদ্য ব্যাংক

মুষ্টির চাউল জমা করা গ্রাম বাংলার মানুষের ঐতিহ্যবাহী চর্চা। নিশ্চয় আমরা সবাই জানি আমাদের পরিবার গুলোতে প্রতিদিন রান্নার চাউল থেকে এক মুষ্টি চাউল তুলে একটি মাটির পাত্রে সপ্তাহ ব্যাপী জমা করা হতো যা স্বপ্রোণদিত হয়ে ধর্মভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে দান করা হতো বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র। পল্লীশ্রী দরিদ্র মানুষদের নিয়ে দল গঠনের মাধ্যমে কাজ করতে গিয়ে লক্ষ্য করে যে, দরিদ্র মানুষের দৈনন্দিন আয়ের অধিকাংশ অর্থ খাদ্য যোগানের পেছনে ব্যয় হয়। তথাপিও দেখা যায় বছরের বেশীর ভাগ সময় উত্তরবঙ্গের মানুষ অভাব অনটনে থাকে এবং অভাব মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন পথ অবলম্বন করে থাকে যেমনঃ আগাম শ্রম বিক্রি, জমি বর্গা, আগাম ফসল বিক্রি ইত্যাদি এই অবস্থার সঙ্গে মহাজনি প্রভাব ও নারীর উপর বিভিন্ন চাপ সহ নারী নির্যাতনের বিষয়গুলি ওতোপ্রতো ভাবে জড়িত। এই বিষয়গুলি বিবেচনা করে ১৯৯৩ইং সালের শেষের দিকে দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার ১০নং পুনট্টি  ইউনিয়নের চকমুসা গ্রামের সংগঠিত নারী দলে প্রাথমিক ভাবে গ্রাম বাংলার পারিবারিক র্চ্চা মুষ্টির চাল জমা করার বিষয়টি  দলীয় ভাবে চর্চার জন্য রুপালী নারী দলকে উৎসাহিত করা হয়। তাদের মতামতের ভিত্তিতে  তারা উৎসাহিত হয়ে কাজটি করতে থাকে এবং বিভিন্ন অভাবকালীন সময়ে জমাকৃত মুষ্টির চালের মাধ্যমে দলের সদস্যগন অভাব মোকাবেলা করে থাকেন। বিষয়টি গ্রামের অন্যান্য দল লক্ষ্য করে এবং উদ্ধুদ্ধ হয়ে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দল, এলাকা ও নতুন নতুন প্রকল্প সমুহ এই ধারনায় সমৃদ্ধ হয়ে অভিঞ্জতাটি  গ্রহন করে । সংগঠিত দল সমুহ মাসিক সমন্বয় সভার মাধ্যমে চাউল সংগ্রহ করে সমন্বিত খাদ্য ব্যাংক এ জমা রাখে ধীরে ধীরে এর কলেবর বৃদ্ধি পাওয়ায় জমাকৃত চাউলের হিসাব রেজিষ্টার খাতায় সংরক্ষন করা এবং মাসিক সমন্বয় সভায় হালনাগাদ তথ্য দলে উপস্থাপন করা হয়।সর্বনি¤œ ৪০ কেজি হতে ৬০ কেজি চাউল সমন্বিত ফুড ব্যাংক এ মজুদ থাকে ।সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের চাউল একত্রিত হওয়ায় অনেকদিন পর্যন্ত চাউল সমুহ সংরক্ষনে রাখা যায় না । উদ্বৃত্ত চাউল পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায় রেজুলেশনের মাধ্যমে সকলের মাঝে বন্টন করা হয় বিধায় সদস্যদের সম্মতিক্রমে উদ্বৃত্ত চাউলের বিক্রয় কৃত অর্থ লটারির মাধ্যমে সকল সদস্যগনের মাঝে উৎপাদনশীল ও চাহিদা ভিত্তিক সম্পদ বিতরন করা হয় । তবে সেক্ষেত্রে সকল সদস্যের অর্থের পরিমান সমান থাকে। কোন সদস্যের মৃত্যু হলে তার পরিবারকে প্রাপ্যাদি বুঝিয়ে দেয়া হয় ।অনেক সময় এলাকায় তারা বিক্রয় অর্থ দিয়ে  সেবা মুলক কাজ করে যেমন মৃতব্যক্তির দাফন, সৎকার ,দূযোগ কালীন সময়এবং দুঃস্থতা বিবেচনা  করে সদস্যদের সম্মতির ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয় যা অফেরতযোগ্য  ।দলের সদস্য ময়না বেগম বলেন খাদ্য ব্যাংক আছে বিধায় অনেকটা চিন্তা মুক্ত থাকি ।